অন্য ৩০ খেলার কী হবে?
১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৫ এএম
খেলাধুলার প্রাণকেন্দ্র রাজধানী ঢাকা। এর পরেই গুরুত্ব দিকে দিয়ে বিবেচনা করলে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের নাম বলতে হয়। ক্রিকেট, ফুটবল, অ্যাথলেটিক্সসহ অন্যান্য ইভেন্টে চট্টগ্রামকে বাদ দিয়ে জাতীয় দল গঠন করতে পারতো না। এসব ইভেন্টের খেলোয়াড়রা উঠে এসেছিল বন্দর নগরী প্রাণকেন্দ্র এম.এ. আজিক স্টেডিয়াম থেকেই। এ স্টেডিয়ামকে ঘিরে সিজেকেএস এর অধীনে বছরে অর্ন্তন্ত ৩২টি ইভেন্ট আয়োজন করা হয়। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে টেস্ট খেলা হয়েছিল এ মাঠে। সেখানে প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ।
ক্রিকেটের ইতিহাসে স্মরণীয় এম.এ আজিজ স্টেডিয়ামের মাঠকে শুধুমাত্র ফুটবল খেলা আয়োজনের জন্য সম্প্রতি ১২টি শর্তে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কাছে লিজ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। এই সিদ্ধান্ত চট্টগ্রামের খেলাধুলায় সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন চট্টগামের ক্রীড়া সংগঠকরা। তারা বলছেন ঢাকা ছাড়া দেশের অন্যান্য জেলার স্টেডিয়ামগুলো জেলা ক্রীড়া সংস্থা তাদের খেলাধুলা এবং প্রশিক্ষণ কাজে ব্যবহার করে। একইভাবে এম.এ. আজিজ স্টেডয়ামে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা তাদের নিজস্ব ইভেন্টগুলো পরিচালনা করে। তাছাড়া এম.এ আজিজ স্টেডিয়াম আগে থেকেই আন্তর্জাতিক্র ক্রিকেট স্টেডিয়াম হিসেবে আইসিসির তালিকাভুক্ত।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং শুধুমাত্র ফুটবল খেলা আয়োজনের জন্য বাফুফে’কে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক বরাদ্দ প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে আবেদন করেছেন ক্রীড়া সংগঠকরা। আবেদনে তারা বলেছেন এম.এ. আজিজ স্টেডিয়ামটি বহুমাত্রিক ক্রীড়া কর্মকান্ডে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ফুটবল ক্রিকেটসহ অন্যান্য প্রায় ৩০টি খেলা অনেক বছর যাবত নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিজস্ব জায়গায় চট্টগ্রামের বিত্তবান চট্টগ্রামের ক্রীড়া প্রমিকের অর্থাত্ময়নে এই মাঠটিকে স্টেডিয়াম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। এছাড়া এম.এ আজিজ স্টেডিয়ামে সিজেকেএস আয়োজিত খেলা ব্যতিরেকে চট্টগ্রাম জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত সকল খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এ মাঠে। ইতিপূর্বে বাফুফে কর্তৃক সকল প্রকার ও জাতীয় আন্তর্জাতিক ফুটবল লিগ/টুর্নামেন্টসহ অন্যান্য জেলার সাথে সমন্বয় করে সফলতার সাথে আয়োজন ককরে যাচ্ছে অন্যান্য খেলা। জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিসহ জাতীয় দল সমুহের অনুশীলন এম.এ আজিজ স্টেডিয়ামে হয়ে থাকে। উপযুক্ত বর্ণনায় উল্লেখিত বিষয়সমূহ বিবেচনায় না এনে শুধুমাত্র ফুটবল খেলায় আয়োজনের জন্য বাফুফেকে মাঠটি বরাদ্দ প্রদান করা হলে ফুটবল ছাড়া অন্যান ৩০টি খেলার স্থানীয় লিগ/টুর্নামেন্টসহ ইভেন্টের অনুশীলন কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে যাবে।
তাছাড়া জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টের জন্য আগত বিভিন্ন দলের অনুশীলনও বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে চট্টগ্রামের ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও অনুষ্ঠিত না হওয়ার সংজ্ঞা থেকে যায়। চট্টগ্রামের ক্রীড়ামোদিরা ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও বাফুফেকে কর্তক চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক ফুটবল স্টেডিয়াম করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে ফুটবলের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে পরিচালনাধীন পলোগ্রাউন্ড মাঠ বা জঙ্গল ছলিমপুর বা কর্ণফুলী ট্যানেলের অপর প্রান্তে স্থাপত হলে একদিকে জানযট মুক্ত হবে এবং অপর দিকে কর্ণফুলী নদীর অপর প্রান্ত অধিকতর হারে ব্যবহারের উপযোগী হবে বলে মনে করছেন ক্রীড়া সংগঠকরা। এরই সাথে নতুন একটি আন্তর্জাতিক স্থাপনা তৈরী হবে।
এদিকে এ সংকট পরিস্থিতি এবং তা উত্তোরণের উপায় সম্পর্কে জেলা দলের সাবেক ফুটবলার ও সিজেকেএস’র সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, এখানে আমরা ফুটবল ও ক্রিকেট খেলি। প্রিমিয়ার ফুটবল, দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল, তৃতীয় বিভাগ ছাড়াও এ মাঠে প্রতি, অ্যাথলেটিক্স, হ্যান্ডবল, ভলিবল, কোকো, কাবাড়িসহ অনেকগুলো খেলার আয়োজন করি। জেলা ক্রীড়ার সংস্থার অধীন এটি একটি পুরানো মাঠ। আমাদের মাঠে আমরা এসব খেলাধূলা করি। এটা একধনের বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো। এমাঠ থেকে ক্রিকেটার নান্নু, আকরাম, শহীদ, মাসুম, তামিম ইকবাল, রুবেল, নাজিম উদ্দিন, নাফীস ইকবালের মতো জাতীয় দলের খেলোয়াড় সৃষ্টি। আবার এখান থেকে হাতে খঁড়ি নিয়ে এ প্রজন্মের অনেকে ঢাকা প্রিমিয়ার, প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ খেলছে। এই সংঙ্গে ফুটবলেও আশীষ, সুনীল, দীলিপ বড়–য়া, কাওসার আহমেদ, ইউসুফ বলি, জসিম উদ্দিন খসরু, মান্নান, মিন্টু, কাওসার পারভেজ, আনোয়ার, ফরহাদ, আসাদ, জাহেদ পারভেজ এই রকম অনেক খেলোড়য়ার জাতীয় দলের এখান থেকে সৃষ্টি। আমাদের এখানে ফুটবল ও ক্রিকেট নিয়ে কোন সংঘাত নাই। চট্টগ্রামে তো ক্রিকেটের একটি আন্তর্জাতিক একটি ভেন্যু আছে। তাই রাজধানী ঢাকাকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের অন্য কোন বিভাগীয় শহরে ফুটবলের জন্য একটি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম গড়ে তোলা যাতে পারে। চট্টগ্রামে এ ধরনে মাঠ করার চিন্তা থাকলে পলোগ্রাউন্ড মাঠ রয়েছে। সেখানেও হতে পারে। অথবা চট্টগ্রামের ট্যানেল এলাকায় হতে পারে। তা হলে আমাদের ক্রীড়া সংস্থার স্টেডিয়াম এম.এ আজিজ স্টেডিয়ামটি আমাদের থাকবে। এ ব্যাপারে বতর্মান সিদ্ধান্তটা পুন:বিবেচনা করা প্রয়োজন।
সিজেকেএস এর সদ্য বিলুপ্ত কমিটির ক্রিকেট সম্পাদক আবদুল হান্নান আকবর বলেন, ফুটবলের জন্য বাফুফে’র মাঠটি নিয়ে গেলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার এতগুলো ইভেন্ট কোথায় হবে? তাই ফুটবলের জন্য নতুন ভেনুর তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জেলা ক্রিড়া অবস্থান ঠিক রেখে কর্ণফুলী নদীর ওপারে ট্যানেলের কাছাকাছি কোথাও মাঠ নির্বাচন করা যেতে পারে। ওখানে অনেক জায়গা রয়েছে এছাড়া ফৌজদারহটের আশে-পাশেও বহু জায়গা রয়েছে সেখানে ফুটবলের জন্য একটি বিশেষায়িত মাঠ গড়ে তোলা যেতে পারে, তাহলে আমাদের ইভেন্টগুলো বাঁচবে, তা না হলে অন্যান্য ইভেন্টগুলো শেষ হয়ে যাবে, চট্টগ্রামে আরো কোন খেলাধূলাই থাকবে না।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বগুড়ার নন্দীগ্রামে তারুণ্যের ফুটবল প্রতিযোগিতার উৎসব
দেশে অবস্থানরত অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের আবারও সতর্ক করল সরকার
কালীগঞ্জে জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী
বাউফলে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়কের বহিষ্কার দাবি
স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের খবর জানালেন জয়
খালেদা জিয়া অনেকটা ভালো আছেন : মির্জা ফখরুল
সুস্থ প্রতিযোগিতা না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাভাবিক বিকাশ হবেনা- কমিশন প্রধান
সিংগাইরে স্থানীয় সরকার সংস্কার বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
মালি আছে, বাগান নেই
পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি করবে বাংলাদেশ
নতুন খেলোয়াড় চান গুয়ার্দিওলা
এস আলমের ৬৮ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, জব্দ ১৬ সম্পদ
সিলেটসহ দেশের পাথর ও বালু মহাল নিয়ে সরকারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত
দৌলতপুরে নগদের মার্কেটিং অফিসারকে কুপিয়ে জখম
গোলের সুযোগ নষ্ট, হাভার্টজের পরিবারকে হত্যার হুমকি
ইসলামী আন্দোলনের আয়োজনে ভোলা জেলার উন্নয়ন শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
প্লট দুর্নীতি : শেখ হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা
নেছারাবাদে গার্মেন্টস কর্মীকে ধর্ষন গ্রেফতার-৩
পিরোজপুরে অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনী পরিষদের উদ্যোগে কম্বল বিতরণ
হামাসের নতুন নেতা কে এই মোহাম্মদ সিনওয়ার?